১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,বিকাল ৪:০৮

বাগেরহাটে ভিনদেশি দুর্লভ ‘লিলিয়াম’ ফুল প্রথমবারের মতো ফুটেছে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

আলী আকবর টুটুল, ভিনদেশি দুর্লভ ‘লিলিয়াম’ ফুল প্রথমবারের মতো ফুটেছে বাগেরহাটে। প্রতিটি ফুল আমাদের দেশে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য পাওয়ায় লিলিয়ামের বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ফুলে আগ্রহ বেড়েছে ফুলপ্রেমিদেরও।

শীত প্রধান দেশগুলোতে সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপী, লাল ও বেগুনী বর্ণের লিলিয়াম ফুল দেখা যায়। ফুলের বর্ণচ্ছটা অনেকটা চিত্রের মতো। দেখতে কোনও শিল্পী তাঁর তুলি দিয়ে ফুলের গায়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে। এ জাতের ফুলে ছয়টি পাপড়ি থাকে যারা বেশ প্রসারিত হয়। এবার ১৬ ডিসেম্বর, নববর্ষ  ও ২১ ফেব্রুয়ারিতে সুগন্ধি ‘লিলিয়াম’ ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষকের।

এউপলক্ষে বুধবার দুপুরে মোল্লাহাট উপজেলার গারফা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা ফয়সাল আহম্মেদের জমিতে এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশি (নেদারল্যান্ড) জাতের লিলিয়ান ফুলের এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে মধুমতি নার্সারীর মালিক টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে  প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন লাল তীর সিডস লি: পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালাসহ আরও অনেকে।

সফল উদ্যোক্ততা ফয়সাল আহম্মেদ বলেন,বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাল তীর লিমিটেডের সহযোগিতায় নেদারল্যান্ডের থেকে নিয়ে আসা ২০০ টি কন্দ বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গড়ফা গ্রামের নিজ জমিতে গত ৩০ অক্টোবর পরীক্ষামুলক চাষ শুরু করি। মাত্র ৩৪ দিনে  হারভেষ্টে চলে আসে। এতে আমরা খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক ফুলের চাষ আগামীতে বাণিজ্যিক ভাবে ফুলের চাষ করা হবে। এটা খুব দামি ফুল। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। এতে আমরা খুব লাভবান হবো মনে করছি।ইতোমধ্যে অনেক কৃষকরা আসছেন চাষ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রতিদিন ফুলক্ষেত দেখতে আসছেন দূর দূরান্ত থেকে স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। অনেকে ফুলের সাথে ছবি তুলছেন । প্রথম বারের মত এই ফুল দেখে অনেকে উচ্ছাসিত।

লাভনী নামের এক তরুনী বলেন, আমরা ইউটিউবে দেখেছি, আজ স্ব-চোখে দেখলাম,ছবি তুললাম। উচ্চমুল্যের ফুল দেখে অনেক ভাল লাগলো। আমরা চাই এই ফুলের চাষ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ুক।

লালতীর সীড লিমিটেডের পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিদেশীদের সাথে তালমিলিয়ে কৃষকদের সবজীসহ নানা কৃষি পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে নিতে চেষ্টা অব্যাহত আছে। সম্প্রতি লেদারল্যান্ড থেকে লিলিয়াম ফুলের বাল্ব (কন্দ) এনে চাষিদের দেওয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যে ভাল উৎপাদন হওয়ায় বিদেশী জাতের লিলিয়াম ফুল সম্ভবনাময় দেখা গেছে। আশাকরি এই ফুলের উৎপাদন বাড়লে আগামীতে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলো রপ্তানী করে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করবে। তাই কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর মজুমদার বলেন, লিলিয়াম ফুল বর্ণ বৈচিত্র ও সুগন্ধের কারণে বাংলাদেশেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমদানি করা প্রতিটি ফুল আমাদের দেশে দুই থেকে তিনশ টাকায় বিক্রি হয়। বাগেরহাটের মোল্লাহাটে কৃষি উদ্যোক্ততা ফয়সাল আহম্মেদ পরিক্ষামুলক ভাবে লিলিয়াম ফুল চাষে সফলতা পেয়েছে। আমরা আশাকরি জেলাব্যাপী লিলিয়াম ফুলের চাষের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে কৃষকরা অল্প সময়ের মধ্যে চাষ করে লাভবান হতে পারে।

 

 

  • শেয়ার করুন