প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক. বাগেরহাটের রামপালে পাঁচ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়েছে ঢাকা মেগা সিটি লায়ন্স ক্লাব। এ ক্লাবের উদ্যোগে ও দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থা এবং লায়ন ডক্টর শেখ ফরিদুল ইসলামের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় শ্রীফলতলা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।বাগেরহাটের রামপালে পাচঁ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে চলছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। চক্ষু চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. বেলায়েত হোসেন। লায়ন ডক্টর শেখ ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চক্ষু ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ জাকির হোসেন।এখানে প্রথমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে ছানী অপারেশনের রোগী বাছাই করা হয়। বাছাইকৃত ছানী রোগীদের ঢাকায় লেন্স সংযোজনের মাধ্যমে অপারেশন করা হবে। চোখের অল্প সমস্যাজনিত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসাসহ ফ্রি ওষুধ দেয়া হয়। বয়স্কজনিত কারণে চোখে কম দেখা রোগীদের জন্য ফ্রি চশমা দেয়া হয়েছে।
এসময় ঢাকা মেগাসিটি লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লায়ন ডক্টর শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের সমস্ত সরিরের মধ্যে চোখ একটি অমূল্য সম্পদ। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আমরা ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চক্ষু চিকিৎসা শিবির পরিচালনা করে আসছি। নির্মোহভাবে ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা মহৎ এ কাজটি করে আসছি। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দক্ষিঞ্চান-পশ্চিমাঞ্চলের এ জনপদ চোখের সমস্যাজনিত রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপারেশনের ফলে শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কর্ম করতে পারছে, লেখাপড়া শিখতে পারছে, যে যে ধর্মের অনুসারী সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারছে। প্রতিবছর ৬ শত থেকে ৮ শত রোগীর ছানি পড়া, চোখের নেত্রনালী ও মাংশ বৃদ্ধিজনিত রোগীদের অপারেশন করা হয় এ সংগঠনের মাধ্যমে। এখানে ছানি পড়া রোগীদের লেন্স সংযোজন ও চশমা দেয়া হয়। সংগঠনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৭ হাজার রোগীকে অপারেশন সহ লেন্স সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও লক্ষাধিক চোখের রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, ওষুধ প্রদান এবং চশমা প্রদান করা হয়েছে। এই বৃহৎ চক্ষু শিবিরে বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর ও বরিশালসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজের বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে আমাদের সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরা আরও ভালো থাকবে। তাই এ মহতী কাজে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে সবার দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করে বাগেরহাটের রামপালে দেশের সর্ববৃহৎ চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন কালে তিনি সকলের সহযোগিতা চান।’
শুক্রবার দিনব্যাপী শ্রীফলতলা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত চক্ষু শিবিরের উদ্বোধন কালে প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।এসময় তিনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও এখানে এসেছি। এমন মহৎ কর্মযজ্ঞ দেখে আমি অভিভূত। এমন মহৎ কাজে যারা সচেতন মানুষ আছি, এ কাজে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিৎ। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য সবাই এভাবে এগিয়ে এলে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধ হবে।’
চক্ষু চিকিৎসা শিবিরে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মো. জাকির হোসেন, রামপাল উপজেলা বিএনপির আহ্বান শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন, খুলনা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন, উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব কাজী জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
চক্ষু চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে প্রায় ৬ সহস্রাধিক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, ৬ শতাধিক রোগীকে চশমা প্রদান, ৫ শতাধিক রোগীকে ছানি, নেত্রনালী ও মাংশ বৃদ্ধি রোগীকে বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৭শ রুগীকে অপারেশনে ঢাকায় নেয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। চক্ষু শিবিরের সমন্বয়কারী খান আলী আজম বলেন, ‘যতক্ষণ রোগী থাকবে ততক্ষণ অপারেশনের জন্য রোগী বাছাই করা ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। আর অপারেশনের রোগীদের আমদের নিজেদের খরচে ঢাকায় নিয়ে সম্পুর্ন ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান ও সুস্থ করে বাড়িতে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব।’