প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫
বাগেরহাটে নোংরা পরিবেশে গরু জবাই, ওজনে কম দেওয়া ও বেশি দামে গোশত বিক্রি করার অপরাধে ৩ টি দোকানকে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে শহরের প্রধান কাচাবাজারে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এই অভিযান পরিচালনা করেন।
অর্থদন্ড প্রাপ্ত তিনটি দোকানের মালিকই মাংস ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম। অভিযানকালে তিনি গরু ক্রয়ের রশিতে দেখাতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণ ও অতিরিক্ত দামে গরু-খাসির মাংস বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। পার্শবর্তী জেলা-উপজেলা থেকে শহরের প্রধান এই বাজারে গরু খাসির মাংস বিক্রি হয়ে আসছে কেজিতে ৬০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দরে।
অভিযানের সময় ক্রেতা সাধারণ ও বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা মাংস বিক্রিতে আব্দুস সালামের সিন্ডিকেট, নোংরা পরিবেশে গরু জবাই, নদীতে বর্জ্য ফেলা এবং নদী দখল করে গরু ও চামড়া রাখার শেড করার অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে নোংরা-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরু জবাই, নদীতে জবাইকৃত পশুর রক্ত ও বর্জ্য ফেলা, নদী দখল করে শেড নির্মাণ করার বিষয়টি দেখতে পান অভিযানে যাওয়া সেনাবাহিনী ও ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা। এ সময় পৌরসভার দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও ডেকে আনেন তারা।
পশু জবাই খানায় গোবর ও ময়লা-আবর্জনার মাঝে কিলবিল করছিল ক্রিমিসহ নানা পোকা।
অভিযানকালে বাজারে মাংস ব্যবসার সিন্ডিকেট সম্পর্কে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রতিনিধি হাওলাদার মনিরুজ্জামান বলেন, মাংস ব্যবসায় যে সিন্ডিকেট আছে, এই সিন্ডিকেট ডিসি স্যারের সঙ্গে বসে এই সপ্তাহের মাঝে আমরা ফসালা করবো এবং দাম নির্ধারণ করবো বলেও জানান তিনি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাগেরহাট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শরিফা সুলতানা বলেন, সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় সদর বাজারের মাংসের দোকানগুলো আমরা পরিদর্শন করি। অধিকাংশ দোকানের ওজন পরিমাপকগুলোই মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। ওজনে কারচুপির একটা সম্ভাবনা এখানে রয়েছে। এজন্য তিনিটি দোকানকে জরিমানা করা হয়েছে।
শরিফা সুলতানা বলেন, অধিকাংশ দোকানে গরুর মাসের দাম বেশি। এজন্য জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাইকে নিয়ে একটি সভা করে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
অভিযানকালে বেশি কিছু বিষয় আমারা দেখেছি, এখানে পৌরসভার লোক ছিল, তাদের কেও আমরা অনুরোধ করেছি, এগুলো অনেক বড় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কোথায় তারা গরু জবাই করবে, অনেগুলো ভ্রাম্যমাণ দোকান এসব বিষয়ে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবেন।
এছাড়া সদর উপজেলার ফতেপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে এদিন একটি মাছের আড়ৎকে ওজনে কম দেওয়া ও মাছ তাজা দেখাতে রং দেওয়ার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এ দিন বাগেরহাট বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খারিস মাংস ১১শ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। অভিযানের খবর শুনে বাজারের কয়েকটি মাংসের দোকান বন্ধ করে দিতেও দেখা যায় দোকানীদের।