প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক. পূর্নিমার জোয়ারে বাগেরহাটের ভৈরব, পানগুছি, পশুর, দড়াটানাসহ বিভিন্ন নদীতে বিপদ সিমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জোয়ারের পানিতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার অন্তত সহস্রাধিক বাড়িঘরে উঠে গেছে। বুধবার (০২ আগস্ট) দুপুরের জোয়ারের নদী-খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দুপুরে হাড়িখালি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব নদীর তীরে থাকা হাড়িখালি ও মাঝিডাঙ্গা এলাকার অন্তত ২০ টি বসত ঘর প্লাবিত হয়েছে। কারও কারও ঘরের মধ্যেও পানি উঠে গেছে। ছাগল ও গবাদি পশু ঘরের খাটের উপর রেখেছেন তারা। রান্না ঘরে পানি উঠে যাওয়ায়, খাবার বন্ধ রয়েছে কয়েক জনের। বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প মাঝিডাঙ্গা এলাকাও মাঝে মাঝে প্লাবিত হয়। শুধু হাড়িখালি-মাঝিডাঙ্গা নয়, বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, কলাবাড়িয়া, পানিঘাটসহ বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে পানগুছি নদীর পানিতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রধান বাজার, পৌরসভার একাংশ, উপজেলা পরিষদ চত্বর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া, বহরবুনিয়া, পঞ্চকরণ, তেলিগাতি, হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে।
হাড়িখালি এলাকার আফছার আলী হাওলাদার বলেন, বেরিবাঁধ নেই, ঘরদুয়ার সব তলাইয়া গেছে। ঘরে যাওয়া লাগে কাছা দিয়া। রান্না বান্না সব বন্ধ। আমাদের দিকে কেউ খেয়াল করে না।
একই এলাকার মনির শেখ বলেন, আষার-শ্রাবন মাস আসলে খুবই কষ্টে থাকতে হয়। মাঝে মাঝেই পানি উঠে যায়। ভৈরবের পাশে যদি একটি বাঁধ দেওয়া থাকত, তাহলে আমরা কিছুটা শান্তিতে থাকতে পারতাম।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের বুলি কাজী বলেন, জোয়ারের পানিতে মোরেলগঞ্জ বাজার, উপজেলা চত্বরসহ পৌর শহরের বেশকিছু এলাকায় হঠাৎ পানি উঠে যায়। লোকজনের খুব ভোগান্তি হয়েছে। পানগুছি নদীর পাড়ে টেকসিই শহর রক্ষা বাঁধ থাকলে, আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হত না।
বহরবুনিয়া এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, চারপাশে নদী-আর খালের মধ্যে আমাদের বহরবুনিয়া ইউনিয়ন। হঠাৎ করে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশকিছু পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি থাকায়, পানি সহজে নামছে না বলে জানান রফিকুল ইসলাম। খাউলিয়া,পঞ্চকরণ, তেলিগাতি ও হোগলাবুনিয়া তেলিগাতি ইউনিয়নের বেশকিছু পরিবার পানিবন্ধি রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুপুরের জোয়ারে স্বাভাবিকের থেকে দড়াটানা নদীতে বিপদ সিমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে বাঁধ রয়েছে, সেগুলো এখনও ঝুকিমুক্ত রয়েছে। তবে বাঁধ না থাকা কিছু এলাকায় পানি ওঠার খবর পেয়েছি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, পানিতে যাতে কারও কোন অসুবিধা না হয়, সেজন্য খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।