২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,সকাল ৮:১৭

বাবার লাশ ফেলে পালালো সন্তানরা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফন

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক. বাগেরহাটের শরণখোলায় আব্দুল আজিজ মৃধা (৮০) নামে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।মঙ্গলবার (১১ জুলাই)বিকেলে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।

বুধবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হওয়ার কথা। কবরও প্রস্তত করা হয় একটি মাদরাসার কবরস্থানে। কিন্তু জানাজার সময় ঘটে বিপত্তি। মরহুমের জানাজা শুরু হওয়ার আগ মুহুর্তে কয়েকজন পাওনাদার উপস্থিত হলে তাদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে বাবার মরদেহ  ফেলে পালিয়ে যায় সন্তানরা। জানাজা পন্ড হয়ে যায়।  এমন পরিস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রায় ৫ঘন্টা তার লাশ পড়েছিল উপজেলা সদর রায়েন্দা কেন্দ্রীয় মসজিদের অজুখানার পাশে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবারের লোকদের খুঁজে এনে দুপুর আড়াইটার দিকে জানাজা সম্পন্ন করে মরদেহ তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে।

স্বজন ও এলাকাবাসি জানায়, উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের আব্দুল আজিজ মৃধা। তাফালবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসরে যান। তার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন কয়েক বছর আগে।  দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি বসবাস করতেন উপজেলা সদরের পাঁচরাস্তা এলাকায়। প্রায় ৬ মাস ধরে তিনি দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন আব্দুল আজিজ।

আব্দুল আজিজের প্রথম সংসারের বড় ছেলে মতিয়ার রহমান বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী-সন্তানদের চাপে বাবা আমাদের কোনো খোঁজ নিতেন না। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর কৌশলে তার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করে নেয় তারা।কিন্ত বাবার কোনো দেনা পরিশোধ করেনি তারা। জানাজার সময় পাঁচ জন পাওনাদার এসে টাকা দাবি করলে দ্বিতীয় ঘরের সন্তানরা বাবার লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এমতাস্থায় বেওয়ারিশ হিসেবে বাবার লাশ দাফনের জন্য স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এজন্য উপজেলার মালিয়া আল-ফালাহ্ মাদরাসার কবরস্থানে তার কবর প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজের মধ্যস্ততায় পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে আশ্বস্ত করার পর জানাজা সম্পন্ন হয়। বাবার লাশ আমাদের গ্রামের বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করেছি।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধান করে মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য বলা হয়। পাওনাদাররা যাতে তাদের টাকা পেতে পারেন সেব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

  • শেয়ার করুন