২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ২:০৩

মৌসুমের শুরুতে ঘেরে মারা যাচ্ছে চিংড়ি, হতাশায় চাষি

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে মৌসুমের শুরুতেই বাগদা চিংড়িতে মড়ক দেখা দিয়েছে। প্রচন্ড তাপদাহ, স্বল্প পানি ও ভাইরাসের কারণে আশঙ্কজানক হারে মরে যাচ্ছে ঘেরের চিংড়ি।চোখের সামনেই বিক্রয়যোগ্য বাগদা চিংড়ি মরে, ঘেরেই পচে যাচ্ছে। মরা শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই মাছ শূন্য হয়ে যাচ্ছে ঘের। জেলায় সব থেকে বেশি মাছ মরেছে রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে।উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি চাষে এমন বিপর্যয়ে বাগেরহাটের অধিকাংশ চাষি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। লোকসানের শঙ্কায় হতাশা বিরাজ করছে চাষীদের মাঝে। ঘেরে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পানি পরিস্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মৎস্য বিভাগ।

রামপাল উপজেলার গাববুনিয়া গ্রামের আরাফাত ইসলামের ছোট বড় সাতটি ঘের। সাতটি ঘেরেই লেগেছে মড়ক। ইতোমধ্যে জমির হাড়ি, পোনা ও খাবারে ব্যয় হয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। পুজি ওঠা নিয়ে শঙ্কায় আরাফাত ইসলাম। তিনি বলেন, কয়েকবার মাছ বিক্রি করতে পারছি। এরপরেই মড়ক শুরু হয়েছে। এবার মূল টাকাই উঠবে না।

একই উপজেলার গিলাতলা গ্রামের চিংড়ি চাষী আবু সাইদ শেখ বলেন, গেল বছরের তুলনায় এবার বেশি পুজি নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছি। প্রচন্ড তাপদাহ ও ভাইরাসের কারণে ৯০ শতাংশ মাছ মারা গেছে। শুধু রামপাল নয়, মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট সদর, মোংলা, ফকিরহাটের চাষীদেরও একই অবস্থা। লোকসানের শঙ্কায় চিন্তার ভাজ এখন চাষীদের কপালে। চাষীদের ঘুরে দাড়োনোর জন্য সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন চিংড়ি চাষী সমিতির নেতারা।

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সভাপতি ফকির মুহিতুর রহমান সুমন বলেন, ‘বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য চাষীরা ধারদেনা করে চাষ শুরু করেছিল। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই মাছ মারা যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন চাষীরা। চিংড়ি শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে চাষীদেরকে পরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করেন চাষী সমিতির এই নেতা।

বাগেরহাটের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল চিংড়ি মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঘেরে পানি স্বল্পতা, অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে চিংড়ি মারা যাওয়া চিংড়ির নমুনা সংগ্রহ করে পরিক্ষা-নিরিক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। সেই সাথে ঘেরে পানি বৃদ্ধির জন্য চাষীদের গভীরতা বাড়ানো প্রয়োজন। মাঠ পর্যায়ে চাষীদেরকে মৎস্য বিভাগের কর্মীরা নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয়ের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বাগেরহাট জেলায় ৭২,৭২৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭৭,০০০ ঘের রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫,৬৭২ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন হয়।

  • শেয়ার করুন