প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক. বাগেরহাটে ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ৭তলা ভবনের ২টি লিফট লিফট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৮ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। যখন তখন লিফট বন্ধ হওয়ায় রোগী ও স্বজনরা বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ২৫০ শয্যা গেল দেড় বছর চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বারের ও বেশি লিফট বন্ধ হয়েছে।
এদিকে বহুতল ভবনটি হস্তান্তরের এক বছরের মধ্যে প্রধান ফটকের দুপাশে নির্মান ত্রুটির কাজ চলায় আরও বেশি বিপাকে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসাসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে করে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা।
লিফট বন্ধ হওয়ার কারণে ডেলিভারী রোগী ও মুমূর্ষূ রোগীদেরকে স্ট্রেচারে করে কেবিনে নিতে হচ্ছে। এতে হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মচারী ও রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে লিফট দুটি সচল করার সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্বজনরা তাদের রোগীদের কোলে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় নিয়ে যাচ্ছেন। রোগীদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতেও খুব বেগ পেতে হচ্ছে স্বজনদের । আবার ট্রলি না পাওয়ার কারণে স্বজনরা পাজাকোলা কিংবা ঘাড়ে করে নিয়ে উঠছেন।
কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার নুরুজ্জামান শেখ নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার এক রোগী ছয় তলায় চিকিৎসাধীন। এসে দেখি লিফট বন্ধ হয়ে আছে। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা ডেমা ইউনিয়নের মালিকের বেড় এলাকা থেকে আসা মনিরা বেগম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার মা পঞ্চম তলায় চিকিৎসাধীন। দিনে খাবার, ওষুধসহ ১০-১৫ বার উঠতে নামতে হচ্ছে। এতে প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে।
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা কচুয়ায় উপজেলার আন্ধার মানিক গ্রামের নিত্যানন্দ হালদার বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে হাসপাতালের ৫ তলায় এসেছেন তিনি ডাক্তার দেখাতে। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে তার হার্ট বিট অনেক বেড়ে গেছে।
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা পৌরসভা এলাকার মিঠাপুকুরে বাসিন্দা মিনু বেগম, গায়ে, হাতে, মাজায় ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। এসে দেখি লিফট বন্ধ। ফলে হেঁটে ৫ তলায় উঠেছি ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে আমরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। লিফট চালু থাকলে এই দুর্ভোগ হতো না।
একই এলাকার বাসিন্দা মাহফুজ আহমেদ বলেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এই হাসপাতালে এসেছি। এসে দেখি লিফট বন্ধ। এই রোগী নিয়ে কীভাবে ওপরে উঠব, কীভাবে ডাক্তার দেখাব বুঝতে পারছি না। জরুরিভাবে লিফট দুটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন বলেন ,লিফট বন্ধ থাকায় রোগীদের ভোগান্তী লাঘবে বিকল্প লিফটের পাশাপাশি র্যাম্পের ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
বাগেরহাটে ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন,২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হওয়া ৭ তলা ভবনের দুটি লিফট যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ১৬ মাসে অন্তত ৩০ বার অচল হয়। দ্রুত লিফট চালু করতে গনপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে বলেন এই শীর্ষ কর্মকর্তা।