২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,বিকাল ৩:১০

প্রথমবারের মত পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আসল মোংলা বন্দরে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক. শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ভারতকে বাদ দিয়ে প্রথমবারের মত পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করেছে বাংলাদেশ।বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মোংলা বন্দরের ৮নং জেটিতে নোঙ্গর করে চিটাগুরবাহী পানামার পতাকাবাহী জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯। তখন বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকদের স্বাগত জানায়।এর আগে গেল ২২ জানুয়ারি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পন্য বোঝাই করে মোংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জাহাজটি। ৭ মিটার ড্রাফট ও ১৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজটিতে ৫ হাজার ৫শ মেট্রিকটন চিটাগুর রয়েছে। পুরো চিটাগুর খালাস শেষে কিছু অংশ মোংলার ইউনাইটেড রিফাইনারি অ্যান্ড বাল্ক স্টোরেজ লিমিটেড-এ পরিশোধন করা হবে, বাকি অংশ রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়িতে সড়ক ও নৌ পথের মাধ্যমে নেওয়া হবে।

এর আগে বাংলাদেশী ফিডমিলগুলোর জন্য ভারত থেকে আমদানিকৃত চিটাগুর ব্যবহার করা হত। ভারত এই পন্যে রপ্তানিশুল্ক বৃদ্ধির কারণে, ব্যয় কমাতে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছে, এতে চিটাগুরের দাম কমবে বলে জানান এই আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান পি এ্যান্ড পি ট্রেডিংয়োর প্রোপাইটর আনোয়ারুল হক।তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশের ১৩ টি সুগার মিল ছিল। এই মিলগুলো যখন সচল ছিল, তখন বাংলাদেশ থেকে চিটাগোর রপ্তানি করা হত। আমাদের প্রতিষ্ঠান ১৯৮৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে চিটাগোর রপ্তানি করেছে। এথেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসতো বাংলাদেশে। কিন্তু বেশিরভাগ মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে, আমরা ভারত থেকে চিটাগুর আমদানি করতাম। কিন্তু ভারত হঠাৎ করে চিটাগুড় রপ্তানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয়। যার ফলে তাহলে তারা চিটাগুড়ের দাম বেড়ে যায়। বিকল্প হিসেবে আমরা পাকিস্তান থেকে চিটাগোর আমদানি করেছি। আশা করি পশু খাদ্য তৈরির কোম্পানিগুলোকে আমরা কম দামে সরবরাহ করতে পারব৷ যা দেশের পশু লালন পালন সেক্টরকে  সমৃদ্ধ করবে বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হার্বার এ্যান্ড মেরিন) এমডি শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, নতুন নতুন পন্য আমদানি-রপ্তানি হলে বন্দরের আয় ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি পায়। আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মোংলা বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান বন্দরের এই কর্মকর্তা।চিটাগুর বা মোলাসেস সুগার মিলের বর্জ্য জাতীয় একটি পন্য শিল্পের ভাষায় যাকে বাই প্রোডাক্ট বলে। মূলত সুগার মিল থেকে চিনি উৎপাদনের সময় যে গাঢ়, চিটচিটে ও চিনিসমৃদ্ধ উপজাত পণ্য সংগৃহীত হয় তাকে চিটাগুড় বলে। বাংলাদেশে যখন ১৩টি সুগার মিল চালু ছিল, তখন চিটাগুড় রপ্তানি করে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হত। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশী সুগার মিল গুলো বন্ধ হতে থাকে। বর্তমানে অল্পকিছু সুগার মিল সচল রয়েছে বাংলাদেশে। যদি বাংলাদেশের সবগুলো সুগার মিল সচল রাখা যায়, তাহলে চিটাগুর সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা লাগত না। দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হতো না বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।

  • শেয়ার করুন