১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,দুপুর ১:০৯

জলবায়ু ঝুঁকিতে বাগেরহাটের ঐতিহাসিক স্থাপনা

প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

শহিদুল ইসলাম.  ইউনেস্কো স্বীকৃত ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাটের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতাসহ চরম জলবায়ু ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রিজারভিং লিগেসিস নামক একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক প্রকল্পের জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়ন সেমিনার ও কর্মশালায় এ তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার (১৭ মে) বিকেলে খুলনার একটি বেসরকারি হোটেলে তিনদিনব্যাপী এ কর্মশালাটি শেষ হয়।

আয়োজকদের দাবি, এ কর্মশালাটি ছিল দেশের প্রথম কমিউনিটি-ভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়ন কর্মসূচি, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দা, ঐতিহ্য বিশেষজ্ঞ এবং জলবায়ু গবেষকরা একত্রে কাজ করেছেন। কর্মশালায় ষাট গম্বুজ মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, বিবি বেগনি মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর সমাধি এবং রণবিজয়পুর মসজিদ সংরক্ষণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী করণী এবং সংরক্ষণ পলিসি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক ড. ভিক্টোরিয়া হারম্যান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিন এর অধ্যাপক ও প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়কারী ড. খন্দকার মাহফুজ-উদ-দারাইন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলি ইয়াসমিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর শেখ সিরাজুল হাকিম, প্রফেসর ডক্টর এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রফেসর মোহাম্মদ শেখ মারুফ হোসাইন, প্রফেসর তানজিল সওগাত প্রমুখ।
এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলেও ঐতিহ্য সংরক্ষণের রূপরেখা তৈরিতে দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রিজারভিং লিগেসিস প্রকল্পের বাগেরহাট টিমের সমন্বয়কারী অধ্যাপক দারাইন জানান, “এই স্থাপনাগুলো আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ একত্রে ব্যবহার করে আমরা এগুলোকে ভবিষ্যতের জন্য রক্ষা করতে চাই। এই কর্মশালার সুপারিশসমূহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে শেয়ার করা হবে।
প্রকল্পের আন্তর্জাতিক নির্বাহী পরিচালক ড. ভিক্টোরিয়া হারম্যান বলেন, “এই উদ্যোগটি দেখিয়েছে কিভাবে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকি বোঝা এবং ঐতিহ্য রক্ষায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। এটি জলবায়ু পরিবর্তন ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করেছে।”
স্থাপত্যবিদ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ কর্মী পলিন বলেন, “জাতীয় জলবায়ু নীতিতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিষয়টি এখনও গুরুত্ব পাচ্ছে না। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এই ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে যাবে।”
  • শেয়ার করুন