প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক. বিনা টাকায় সার্কাসে পথে পথে মানুষকে আনন্দ দেন নীলফামারির বাদশা। বাদশার শারীরীক কসরাতে সার্কাস দেখে মুগ্ধ হাজারো মানুষ। মাথা মাটির নিচে পুতে, চুল দিয়ে মোটরসাইকেল আটকে এবং মুখে আগুন নিয়ে নানা ভঙ্গিতের দৃশ্য দেখানো যেন বাদশার কাজ।
শনিবার (১৮মে) বিকালে শারীরীক কসরাতে এমন সার্কাস দেখা যায় বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার চাকশ্রী এ বি সি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে।
নীলফামারীর থেকে আলমগীর বাদশাহ্ নিজস্ব একটি ইঞ্জিনচালিত ইজিবাইকে চড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে মাথায় ও বুকে ইট ভেঙ্গে, শরীরের উপর সাইকেল রেখে তার উপর সাতজন উঠিয়ে, মুখে আগুন জ্বালিয়ে, বুকে লোহার রড ঢুকিয়ে এবং চুল দিয়ে মোটরসাইকেল আটকে রাখে শিশু, কিশোর, নারী,পুরুষ, বৃদ্ধসহ এ সার্কাস প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষকে আনন্দ দেন আলমগীর বাদশাহ্।
বিনা টিকিটে গ্রাম-গঞ্জে এ সার্কাস দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিনোদন দিচ্ছেন দেশের উত্তর অঞ্চলের নীলফামারী জেলার জলডাঙ্গা এলাকার মোঃ আলমগীর বাদশাহ্।
তার কাছ থেকে জানা গেলো তিনি বাগেরহাটে আসছেন প্রায় মাস হতে চলেছে, থাকবেন পবিত্র ঈদুল আযহা পর্যন্ত। প্রতিদিন সার্কাস দেখিয়ে ইনকাম করেন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। তার সার্কাস খেলা দেখে মানুষ মুগ্ধ হয়ে তাকে খুশি হয়ে এ টাকা উপহার দেন নানান শ্রেণি ও পেশার মানুষ ।
হামিম ফকির নামের এক দর্শক বলেন, আমি এমন সার্কাস আগে কখনো দেখিনি। পরিবারের সকলকে নিয়ে মাঠে দেখতে এসেছি। অনেক মানুষ আজ মাঠে উপস্থিত ছিলো, এমন সার্কাস যদি এলাকায় মাঝে মধ্যে হয়, তাহলে এলাকার সকলে এক সাথে থেকে এই সব আনন্দ উপভোগ করতে পারবো।
রামপাল উপজেলার রামনগর এলাকা থেকে আসা কাসেম শেখ বলেন, দীর্ঘদিন পর সার্কাস খেলা দেখলাম। সার্কাসের খেলা খুব আনন্দ দায়ক খেলা, আমার খুব ভালো লেগেছে গ্রামগঞ্জে এখন খেলা খুব কম দেখা যায় । সার্কাস খেলা দেখে খুশি হয়ে আমিও সহযোগিতা করেছি।
আলমগীর বাদশাহ্ বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এ সার্কাস খেলা আমি দেখাচ্ছি। মাথায় ইট ভাঙতে পারি, বুকে ইট ভাঙতে পারি, শরীরের উপর সাইকেল রেখে তার উপর সাতজনকে উঠাইতে পারি, মুখে আগুন জ্বালাইতে পারি, চুল দিয়ে মোটরসাইকেল আটকে রাখতে পারি,এই খেলা গুলা কোন জাদু মন্ত্র নয়। এগুলো হচ্ছে সব অনুশীলন ও সাধন । বড় ভাইয়ের কাছ থেকে এই খেলা শিখে এটাই সংসার চালানোর একমাত্র ভরসা।
তিনি আরো বলেন, নীলফামারী আমার বাড়ি মা-বাবা স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আমার পরিবার। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ আমলে তৈরি দি লক্ষ্মন দাস রয়েল বেঙ্গল সার্কাস পার্টিতে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকার পরে সার্কাস পার্টি বিলুপ্ত হয়। এরপর সংসারের অভাব অনটন দূর ও নিজেদের জীবিকার রাখার তাগিদে পারিবারিকভাবে এ ভ্রাম্যমাণ সার্কাস প্রতিষ্ঠা করে গ্রামে-গঞ্জে ছুটে চলি।বিনা টিকিটে গ্রামে-গঞ্জে এ সার্কাস দেখিয়ে কারো থেকে টাকা পয়সা দাবি করে নেইনা। খেলা দেখে খুশি হয়ে মানুষ যা দেন তা দিয়ে চলে আমার সংসার।
রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির মোঃ আব্দুল্লাহ্ বলেন, পথে পথে নিজের ইচ্ছায় এমন সার্কাস দেখানো এই প্রথম দেখলাম। চাকশ্রী স্কুল মাঠে যে ভ্রাম্যমাণ সার্কাস প্রদর্শন হয়েছে, এ খেলা দেখে হাজারো মানুষ খুশি হয়েছেন।