২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ২:০৬

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আদরের নাতীকে হারিয়ে পাগল প্রায় বৃদ্ধ নানা-নানী

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব  প্রতিবেদক. বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আদরের নাতী তাসপিয়া জাহান রিতুকে হারিয়ে পাগল প্রায় বৃদ্ধ নানা-নানী। নাতির শোকে বারবার অজ্ঞান হচ্ছেন নানা এবারত আলী মোল্লা। মেয়ে জামাইকে কিভাবে শান্তনা দিবে সেই চিন্তায় নির্বাক নাতী হারা বৃদ্ধা হাওয়া বেগম। পাড়া-প্রতিবেশী শান্তনা দিলেও, মন মানছে না তাদের। নাতীর মৃত্যুর খবরে এমন হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের মাসকাটা গ্রামে তাসপিয়া জাহান রিতুর নানা বাড়িতে।

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পানিতে ডুবে নিহত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন তাসপিয়া জাহান রিতু। পারিবারিক কারণে ছোট বেলা থেকে মাসকাটা গ্রামে নানা এবারত আলী মোল্লা ও নানী হাওয়া বেগমের কাছে থাকত তাসপিয়া জাহান রিতু। বাবার ব্যবসা-চাকরী এবং ছোট বোনকে দেখভালের কারণে বাবা-মা উভয় থাকেন চাঁদপুরে। তাই নানা আর নানীই ছিলো রিতুর বড় হওয়ার অবলম্বন। ২০১৭ সালে ফকিরহাটের বেতাগা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৯ সালে খুলনা বয়রা মহিলা কলেজে থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সে।

স্থানীয়রা জানান, ছোট থেকেই নানার কাধে-পিঠে করে বড় হয়েছে রিতু। ছুটিতে বাড়িতে আসলেও নানা-নাতনী ঘুরে ফিরে বেড়াতো আর খুনসুটিতে মেতে উঠত। রিতুর নানা এবারত আলী মোল্লা স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। নাতীর মৃত্যুর খবরে নানা-নানী দুইজন-ই পাগলপ্রায়। কাঁদতে কাঁদতে কয়েকবার জ্ঞানও হারিয়েছেন নানা-নানী। এদিকে বড় মেয়ের মৃত্যুর খবর জানার সাথে সাথে চাঁদপুর থেকে রওনা দিয়েছেন রিতুর বাবা আব্দুর রব ও মা রুমা বেগম। রিতু নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আসাদুজ্জামান তুহিন।

নিহত তাসপিয়া জাহান রিতুর নানা বলেন, ছোট বেলা থেকে অনেক কষ্টে তাসপিয়া জাহান রিতুকে বড় করেছি। কোনদিন বাবা-মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি। আমাদের রেখে চলে গেল, কে আমাকে নানা বলবে। কে বলবে পড়শুনা শেষে চাকুরী পেলে, তার সাথে থাকার কথা এই বলে বারবার কান্না করছিলেন বৃদ্ধ এবারাত মোল্লা।

নিহত তাসপিয়া জাহান রিতুর নানী হাওয়া বেগম বলেন, ছোট বেলা থেকে রিতুকে আগলে রেখেছি। এখন চলে গেল, কি জবাব দেব আমি ওর মা-বাবাকে।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুর‌বিপ্রবি) অভ্যন্তরে অবস্থিত লেকের পানিতে ডুবে তাসফিয়া জাহান রিতু ও অনন্যা হিয়া মারা যায়।

  • শেয়ার করুন