প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
মোল্লাহাট প্রতিনিধি.বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ও তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র শহীদ হেমায়েত উদ্দিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কালে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিক রেজাউল মোল্লা (৩২) উপজেলার গাড়ফা গ্রামের ফেরিঘাট এলাকার মৃত নান্নু মোল্লার ছেলে।
জানাগেছে, শহীদ হেমায়েত উদ্দিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মূল ভবনের উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খন্দকার আলী হায়দার কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই নিয়মবহির্ভূত উপায়ে উক্ত নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তৃতীয় তলার ছাঁদের খুবই কাছাকাছি বিদ্যুতের মেইন লাইনের তার থাকাসত্ত্বেও চরম নিরাপত্তাহীন পরিবেশে নির্মাণ কাজ করানো হচ্ছিলো। ঘটনার সময় রড বাঁকা করছিলেন শ্রমিক রেজাউল মোল্লা। তখন অসতর্কতাবশত বৈদ্যুতিক তারে রড লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন তলার ছাদ থেকে নিচের সড়কে পড়ে যায় রেজাউল। ওই সময় তার শ্রমিক সহকর্মীরা ভয়ে পালিয়ে গেলেও আশপাশের লোকজন তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে রেজাউলের মৃত্যু হয়। সুত্র আরো জানায়, রেজাউলের মা ও বাবা বেঁচে নেই, দুই ভাইয়ের মাঝে বড়ভাই রবিউল ইসলাম স্ত্রী সন্তানসহ তাদের বাড়িতে থাকেন। অবিবাহিত রেজাউল একা কদমতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে তার মা মনোয়ারা বেগমের ঘরে থাকতেন।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে হামীমা জানান, ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভবনের উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ নির্মাণ কাজ শুরু করে মেসার্স খন্দকার আলী হায়দার, কাঠিয়া আমতলার মোড়, সাতক্ষীরা নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে উক্ত কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও শেষ করতে পারে নাই। এছাড়া নিয়মবহির্ভূত উপায়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই কাজ করে। এনিয়ে বারবার সতর্ক করলেও বিষয়টি এড়িয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই কাজ পরিচালনার ঘটনায় শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর জানতে পেরে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।ওই ঘটনার যথাযথ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন প্রধান শিক্ষক।
এবিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত শ্রমিক রেজাউল মোল্লার ময়নাতদন্ত শেষে তার একমাত্র ভাই রবিউল ইসলামের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নাকি তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ? এটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারো সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়নি।