৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১০:৫৯

রেমালের তাণ্ডবে ‘লন্ডভন্ড ফেরিটি চালু হয়নি এখনো, ভোগান্তিতে  দু’পাড়ের বাসিন্দারা

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক. ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের শরণখোলায় রায়েন্দা-মাছুয়া ফেরিঘাট ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ২৫ দিন পরও বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। এতে করে বাগেরহাটের শরণখোলা ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় যোগাযোগ রক্ষাকারী একমাত্র ফেরি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। দ্রুত ঘাট সংস্কার করে ফেরি চালুর দাবি তাদের।ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ফেরিটি এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি, ভোগান্তি নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালে রায়েন্দা-মাছুয়া রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। প্রতিদিন এ ফেরিতে ২০-২৫ হাজার মানুষ ও সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবের কারণে ২৭ মে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনগণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের রায়েন্দা-মাছুয়া ফেরির রায়েন্দা অংশের ঘাট ও পার্শ্ব রাস্তাটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেরির পল্টুন, পল্টুনের সংযোগ সড়ক ও স্টিলের রেলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু জায়গা নদী গর্ভেও বিলীন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেরিঘাটে থাকা ছোট ছোট দোকান। এর ফলে বন্ধ রয়েছে ফেরিটি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দুই পাড়ের মানুষ।ফেরিঘাট থেকে কিছু দূরে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ট্রলারঘাট থাকলেও নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। ভ্যান, পিকআপ, নছিমন ও ট্রাক পারাপার করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফেরিঘাট ও পার্শ্বরাস্তা দ্রুত সংস্কার করে ফেরি চলাচলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

রায়েন্দা এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রেমালে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে সব থেকে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে ঘাটটি নষ্ট থাকায়। জরুরি প্রয়োজনেও যেতে পারছি না। ট্রলারে যেতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দিতে হয়। তাও তাদের ইচ্ছেমত ছাড়ে, ভ্যান ও মালামাল নেয়ার কোন সুযোগ নেই।’

বড় মাছুয়া এলাকার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আসলে ফেরিটি যে আমাদের জন্য কত উপকারী ছিল তা এখন বুঝতে পারছি। ফেরি বন্ধ থাকায় ঈদের সময় অনেকেই আত্মীয়ের বাড়িতে যেতে পারেনি, আবার রায়েন্দা থেকে কেউ আসেনি এলাকায়। দ্রুত ফেরি চালু করা দরকার তা, নাহয় আমাদের ভোগান্তি আরও বাড়বে।’

ফেরিঘাটের পাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হালিম শেখ বলেন, ‘ফেরি চালু হওয়ার পরে ঘাটের পাশে দোকান দিয়ে মোটামুটি সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছিলাম। কিন্তু ২৫ দিন ধরে ফেরি বন্ধ। এতে অন্য লোকজনের যেমন ভোগান্তি হচ্ছে, তেমনি আমাদের আয়-রোজগার বন্ধ।’

মৌ প্রিয়া নামের এক গৃহিনী বলেন, ‘ফেরিটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ ছিল। কিন্তু বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছি। কবে ঠিক হবে জানি না। যত দ্রুত ঠিক হয়, তত আমাদের জন্য ভাল।’

এদিকে সড়ক বিভাগ বলছে, ফেরিঘাট ও পার্শ্বরাস্তা সংস্কার করার প্রস্তাব প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

সড়ক বিভাগ বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফেরির পল্টুন, ঘাট ও পার্শ্বরাস্তা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু জায়গা একেবারে ওয়াশআউট হয়ে গেছে। এটি সংস্কারের প্রস্তাব ও অর্থবরাদ্দের প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব। আশাকরি খুব দ্রুত কাজ শুরু করতে পারব।’

  • শেয়ার করুন