২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,দুপুর ১:০৩

বাগেরহাটে কবিরাজ সেজে কিশোরীকে ধর্ষণ: যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড,রাষ্ট্রের সন্তানের ভরনপোষন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক. বাগেরহাটের কচুয়ায় কবিরাজ সেজে কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে ফেরদাউস শেখ (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। ঘটনার ৯ বছর পরে সোমবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম আসামীর অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেছে আদালত।

এছাড়া আদালত ভিকটিমের সন্তান পিতা-মাতার পরিচয়ে পরিচিত হবে এবং ২১ বছর পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষন ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। শিশুর ভরণপোষণ ব্যায়িত অর্থ সরকার আসামীর বিদ্যামা সম্পত্তি বা ভবিষাতে প্যাপ্য সম্পত্তি থেকে আদায় করতে পারবে।

আসামী ফেরদাউস শেখ বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার ঝালডাঙ্গা গ্রামের আবুল হাসান শেখের  ছেলে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবারনে জানাযায়,  ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ দুপুরের দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ধোপাখালী গ্রামের ওই কিশোরীর বাড়িতে প্রবেশ করেন কবিরাজ পরিচয়কারী ফেরদাউস শেখ । এক পর্যায়ে কিশোরীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করেন ফেরদাউস শেখ।লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরী কাউকে জানায়নি।এক পর্যায়ে কিশোরী অন্ত:সত্তা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ৭ মাস পর ভিকটিমের মা বাদি হয়ে ফেরদাউস শেখকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় ধর্ষনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও ঘটনার সত্যতা পেয়ে পরের বছর ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারী আদালতে ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা  এস আই হুমায়ুন কবির। ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের সংশোধিত ৯ (১) ধারায় অভিযুক্ত আসামী ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। এছাড়া আদালত ভিকটিমের সন্তান পিতা-মাতার পরিচয়ে পরিচিত হবে এবং ২১ বছর পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষন ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। শিশুর ভরণপোষণ ব্যায়িত অর্থ সরকার আসামীর বিদ্যামা সম্পত্তি বা ভবিষাতে প্যাপ্য সম্পত্তি থেকে আদায় করতে পারবে।

এইমামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান এবং আসামী পক্ষের মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী শেখ আনিছুর রহমান।

জাতীয় মহিলা পরিষদের বাগেরহাট জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের আহবায়ক রিজিয়া পারভিন বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমরা হতদরিদ্র ভিকটিমের পাশে থেকে আইনী সহয়তা দিয়ে আসছিলাম। আজ আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। আশাকরি ভবিষাতে ন্যায় বিচার ও আইণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে এধরনের অপরাধ সমাজ থেকে কমে আসবে’।

  • শেয়ার করুন